রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীসে আছে
: যার সম্মুখে তার কোনো ভাইয়ের গীবত করা
হয় আর সে তার সপক্ষে সহযোগিতাকারীরূপে না দাঁড়ায় (গীবতকারীকে প্রশ্রয় দিয়ে যায়), তাকে আল্লাহ তার নিজ ঘরেই অপদস্থ করবেন।
আল্লামা আহমদ শফী সাহেব যখন আল্লাহর পবিত্র ঘরের যিয়ারতে
মক্কা মুকার্রমায় অবস্থান করছিলেন, ঠিক তখনই এখানকার একশ্রেণীর মতলববাজ নিন্দুক যে ভাষায়, যে আঙ্গিকে পত্রপত্রিকা ও ইলেক্ট্রনিক প্রচারমাধ্যমসমূহে এমন কি আইন রচনার
কেন্দ্র পবিত্র সংসদে দাঁড়িয়ে তাঁর বিরুদ্ধে কুৎসা রটনার আভিযান চালিয়ে যাচ্ছিল! তাতে, তার্ঁ স্বপক্ষে দাড়িয়ে এর প্রতিবাদ না করলে মহানবী স: এর
পবিত্র মুখে উচ্চারিত সেই অপদস্থতা অবধারিত। তা যেহেতু কারো কাম্য হতে পারেনা, তাই আজকের এই প্রবন্ধের আবতারণা।
ইদানিং আমাদের দেশে সর্বক্ষেত্রে যেরূপ অনিয়ম ও অরাজকতার
জয় জয়কার, তাতে ব্যাপারটি অপ্রত্যাশিত বা অস্বাভাবিক না হলেও এটা
যে একান্তই অনাকাঙ্খিত অবাঞ্ছিত ব্যাপার, তাতে দ্বিমত করার
অবকাশ কোথায়?
সেই ছোট বেলা থেকেই শুনে আসছি, পুলিশ যদি কাউকে একান্তই গুলি করতে বাধ্য হয়, তাহলে সে সংশ্লিষ্ট
ব্যাক্তির হাঁটুর নিচেই গুলি করবে। তার উপরের অংশে গুলি করলে তাও একটি দন্ডনীয়
অপরাধ। অনুরূপ সংসদীয় ভাষা ও অসংসদীয় ভাষা
বলে একটা কথা বহুকাল ধরে চালু ছিল। কিন্ত আজকাল সংসদে দাঁড়িয়ে যার যেমন ইচ্ছে দাঁতমুখ
খিঁচিয়ে ইতরজনের ভাষায় যে কোন সম্ভ্রান্ত সম্মানী মানুষের চৌদ্দ পুরুষ উদ্ধার করার
পূর্ণ স্বাধীনতা সংসদীয় ভাষা সম্পর্কে অনভিজ্ঞ বা তা মানতে অনাগ্রহী দামিম্ভকরা
ভোগ করে যাচ্ছেন! স্পীকারের আসনে বসা
দলীয় মনোভাবাপন্ন অ-নিরপেক্ষ ব্যক্তিরা হয়
নিজেরাও তা উপলব্ধি করতে পারছেন না,
না হয় দলীয় আনুগত্যের নিগড়ে আবদ্ধ বলে
অসহায়ের মত তা কেবল শুনেই যাচ্ছেন! টেবিলে হাতুড়ি পেটাচ্ছেন না, বা কাউকে সামান্যতম তিরস্কার করতেও তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না! আমরা যতদূর
আনি, কারো ভুল বক্তব্যের প্রতিবাদ করতে হলে সংসদীয় ভাষায়ই তা
করতে হয়। প্রতিপক্ষের বক্তব্যকে অসত্য বলা যাবে - তা মিথ্যা বলা যাবে না। কারো বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা রুজু করেই বিচারাধীন
মামলায় অভিযুক্তকে অপরাধী বলে প্রচার করাটাও গর্হিত কাজ। জাতীয় সংসদের মহান চত্বরে
হলে তো তা আরো বেশি গর্হিত। কোনো দায়িত্বশীল মন্ত্রীর মুখে তা আরো বেশি বে-মানান।
সংসদে অনুপস্থিত এমন কোন ব্যক্তি যার সংসদে দাঁড়িয়ে
স্বপক্ষ অবলম্বন করে তার ব্যাখ্যা দেয়ার বা প্রতিবাদ করার সুযোগ নেই, তার বিরুদ্ধে সংসদে বক্তব্যদানও অসংসদীয় কাজ এবং নেহাৎই অগ্রহণীয়। আল্লামা
আহমদ শফী সাহেব এ দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম এবং যারা তাঁর বিরুদ্ধে নিন্দাবাদ করছেন, তাদের অনেকের তিনি বাপের আবার অনেকের দাদার বয়েসী একজন বুযুর্গ ব্যক্তিত্ব।
তাঁর কোনো রাজনৈতিক পরিচয় বা রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা, রাজনৈতিক অভিলাষ নেই।
এখন তিনি পবিত্র হেরেম শরীফে অবস্থানরত। দেশে থাকলেও সংসদের তিনি সদস্য নন। তাই
সংসদে দাঁড়িয়ে তাঁর এ সব আ-কথা কু-কথার জবাব দেওয়ার কোনো সুযোগই নেই। এমতাবস্থায়
সংসদে দাঁড়িয়ে যাঁরা এমনটি করেছেন, তাদের কাজের কোনো বৈধতা নেই।
একজন ফাঁসির
আসামীকেও তাঁর নিজের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে বা তার নিজ বক্তব্যের তার
প্রদত্ত ব্যাখ্যা না শুনে ফাঁসিতে চড়ানো নীতিবিরুদ্ধ। যাঁরা তাঁর বিদেশে অবস্থানরত
অবস্থায় তাঁর বিরুদ্ধে অশ্লীল ও অসভ্য ভাষায় সমালোচনা করেছেন, তারা এর কী জবাব দেবেন তা আমাদের জানা নেই।
তাঁর পক্ষ থেকে হেফাজতে ইসলামের ভাষ্যকাররা যা বলছেন, তা হলো, যে সব বক্তব্য ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় তাঁর ওয়ায বলে বারবার
প্রচার করে এদেশের জনগণকে ক্ষেপিয়ে তোলার প্রয়াস লক্ষ্য করা যাচ্ছে, এগুলো তাঁর বিভিন্ন সভায় প্রদত্ত বিভিন্ন বক্তব্যের ছাঁটকাট করা উদ্ধৃতি।
পূর্বাপর বক্তব্যসমূই এতে সন্নিহিত নেই বলেই তা নেহাৎ আপত্তিকর ঠেকেছে। এ ছাড়া এটা নেহাৎই তাঁর আঞ্চলিক গ্রাম্য শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে তাদেরই মত করে
উচ্চারিত বক্তব্য। যে পরিবেশে দাঁড়িয়ে তিনি এসব বক্তব্য দিয়েছেন, এগুলো সে পরিবেশেরই চাহিদামত প্রদত্ত বক্তব্য। এতে গ্রাম্য ভাষা, গ্রাম্য আঙ্গিক ও গ্রাম্য উপমা ব্যবহার করা হয়োছে। দৈনিক
‘আমার দেশ’
সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মাহমুদুর রহমান ‘আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আদালতের’ বিচারকের হুবহু
বক্তব্য বিদেশী পত্রিকার বরাতে প্রকাশ করাকে আমাদের এই নিন্দুকরা যেখানে অপরাধ বলে গণ্য করেছেন - এমনি অপরাধ যে, এ জন্য তাঁকে কারাবরণ
করতে হচ্ছে, তাঁর প্রেস-পত্রিকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এসব
প্রতিষ্ঠান-সংশ্লিষ্ট শত শত সাংবাদিক-প্রেসকর্মীকে বেকার করে ফেলা হয়েছে; অথচ মাওলানা আহমদ শফীর বিনা অনুমতিতে তাঁর ‘বক্তব্য’ প্রকাশ ও পুন:পুন: প্রচার করাকে মোটেই অবৈধ বা আপত্তিকর বিবেচনা করা হচ্ছে
না! এটা কেমনতর যুক্তি? এটা তো ঠিক ‘ব্রাহ্মণের ফতোয়া’ যাতে মাকড় মারলে শূদ্র পুত্রের প্রায়শ্চিত্ত লাগে, কিন্তু ব্রাহ্মণপুত্র মাকড় মারলে
ধোকড় হয়!
তর্কের খাতিরে আমরা ধরেই নিলাম, আল্লামা শফী সাহেব সত্য সত্য নারীদের পুরুষদের জন্য লোভনীয় তেঁতুল তুল্য
বলেছেন এবং তাদের সাথে অবাধে মেলামেশাকে নিরুৎসাহিত করার জন্যে তাগিদের সাথে
পুন:পুন: কথাগুলো উচ্চারণ করেছেন। তিনি তো কারো ‘পাঁজরের হাড্ডি দিয়ে ডুগডুগি’ বাজাবার পৈশাচিক আকাঙ্খা প্রকাশ
করেননি
- বা সংসদকে ‘শূয়রের খোয়াড়’ বলার মত ঔদ্ধত্য দেখাননি - যা আমাদের বাম রাজনীতিকরা দীর্ঘ দিন ধরে করে এসেছেন।
নারীরা যে পুরুষদের কাছে অত্যন্ত লোভনীয় এবং তাদের অবাধ
মেলামেশায় যে নানা অনর্থের সৃষ্টি হয় তা কি অবাস্তব কথা?
স্বয়ং আল্লাহই তো পবিত্র কুরআনে বলেছেন :
ঝুয়্যেনালিন নাসি হুব্বুশ শাহওয়াতে মিনান নিসা...
অর্থাৎ : “মানুষের জন্যে নারীদেরকে রমণীয়-লোভনীয় করা হয়েছে।” (সূরা আলে ইমরান : ১৪)
নূর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো আমাদেরকে
দোয়াই শিখিয়েছেন :
আল্লাহুম্মা আউযুবিকা মিনা ফিতানাতিন নিসা।
অর্থাৎ হে
আল্লাহ আমাদেরকে নারী জাতির ফিৎনা থেকে রক্ষা করুন। (আল হাদীস)
তাহলে আহমদ শফী-এর দোষ কোথায়। এ সমস্ত আয়াত ও হাদীসে
সমালোচকরা বিশ্বাস করেন কি না তা এদেশের মুসলিম জনতা জানতে চায়।
মোমেনশাহীর বিখ্যাত গায়িকা মমতাজ-যিনি এখন উঁচু মহলের
গুণগ্রাহিতার সুবাদে একজন ‘মাননীয়’ আইন প্রণেতা সংসদসদস্য, তিনি যদি হাজার হাজার
যুবকের সম্মুখে কোমর বাঁকিয়ে হাসিমুখে নেচে নেচে গানের কলি আওড়ান যুবক হচ্ছে
আগুনের গোলা, আর হাজার হাজার কিশোর-যুবক হৈ-হল্লা করে উচ্ছ্বাসে আবেগে
তাঁকে ধন্য ধন্য করে নেচে ওঠে তাকে না হয় নেহাৎই গানের কলি বলে উড়িয়ে দিলেন, মহাত্মা গান্ধীর মত একজন সাধু সন্ন্যাসী যাকে মি. জিন্নাহ বলতেন ‘ল্যাংটা ফকীর’, তাঁর আত্মজীবনীতে যখন তিনি লিখেন : ‘সত্তর বছর বয়সে যখন নারী সংস্পর্শে আমার লিংগ উদ্রিত হলো তখন আমার বিস্ময়ের
সীমা রইল না’ তখন শতকোটির দেশের প্রভাবশালী ‘বাপুজীর’ এই সত্য কথনকে পাঠক কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন? নিন্দুকরাই বা এর কী জবাব দেবেন?
আদি মানব হযরত আদম (আঃ) নারীর কথায় কান দিয়ে নিষিদ্ধ ফল
খেয়ে চিরশান্তির আবাস বেহেস্ত থেকে নির্বাসিত হয়েছিলেন বলে গোটা খৃষ্টান জগত নারী
জাতিকে অভিশপ্ত জ্ঞান করে।
পৃথিবির প্রথম নরহত্যা হয়েছিল এই নারীকে কেন্দ্র করেই।
আদম (আঃ)-এর প্রথম সন্তান কাবিল সহদোর ভাই হাবিলকে হত্যা করে - বাইবেলে যার বর্ণনা
সবিস্তারে রয়েছে (বাইবেল যাত্রা পুস্তক অধ্যায় ৪:১-১৫)।
৮০-৯০ বছর আগে যখন বৃটিশ সাম্রাজ্যে সূর্য অস্ত যেতনা
তখন বিশাল সাম্রাজ্যের সম্রাটের পদ ৮ম এডওয়ার্ড স্বেচ্ছায় ত্যাগ করেছিলেন এক
কূল-মান-হীন সুন্দরীকে পাওয়ার জন্য।
আমাদের তথাকথিত উচ্চশিক্ষিত ও অত্যাধুনিকরা যতই ফুটানী
করুন, যতই সাধুসজ্জন বনে গিয়ে আল্লামা শফীকে গালাগাল করুন, আমাদের জাতীয় কবির ফজীলাতুননেসার জন্যে পাগলামী আর বর্ধমান হাউসে গান
শিখাতে গিয়ে গানের হিন্দু ছাত্রীর প্রেমে হাবুডুবু খেয়ে পাড়ার হিন্দু গুণ্ডাদের
হাতে মার খাওয়ার কথা তারা কীভাবে অস্বীকার করবেন? স্বয়ং কবির বন্ধু
জাতীয় অধ্যাপক কাজী মোতাহার হোসেন বাংলা একাডেমীতে অনুষ্ঠিত এক সভায় সেই
পাকিস্তানি আমলেই ‘নজরুল পিটানো’ সে লাঠিটি তাঁর কাছে
তখনো মওজুদ থাকার কথা প্রকাশ্য সভায় উচ্চারণ করেছিলেন ‘আমি নিজে সে সভার একজন শ্রোতা ছিলাম’। এই মাত্র ক’দিন আগে এক তন্বী নায়িকা মিতানূরের তথাকথিত আত্মহত্যায়
কি তাঁদের চোখ খুলেনি? বাঙ্গালী জাতির (অবশ্য পশ্চিমবাংলার দাদারা আমাদেরকে
বাঙ্গালী বলেন না, বলেন ‘বাঙ্গাল’)
গর্বের শেখ পরিবারের ছেলে-মেয়েরা যে এখন
ইয়াহুদী-খ্রিস্টান পরিবারে মিশে একাকার হয়ে গেলেন, তার পেছনে কোন্
সত্যটাই বা নিহিত? হিন্দু পরিমল মাস্টার যে মুসলিম ছাত্রীদেরকে বলাৎকার করে
চলে দিনের পর দিন আর মুসলিম প্রিন্সিপাল মহিলা তা চাপা দিয়ে যান তার পেছনে কোন্
সত্যটি লুকিয়ে আছে? জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগনেতার ধর্ষণের
সেঞ্চুরীর জন্য গর্ব করার মৌল উপাদানটা কী ছিল? সব কিছুর পেছনেই সে
দিবালোকের মত সত্য ‘তেঁতুল তত্ত্ব’! সুতরাং লম্ফঝম্ফ ছেড়ে সত্যকে অবনত মস্তকে মেনে নেয়াই হবে
বুদ্ধিমানের কাজ।
এই মাত্র কিছু দিন আগে তথাকথিত ব্লগাররা আল্লাহ-রাসূল
(সাঃ) নিয়ে যখন অকথ্য ভাষায় বিশ্বব্যাপী প্রচারণা চালালো, হিন্দু যুবকরা মুসলিম নামে এসব অমার্জনীয় ঔদ্ধত্য দেখালো, তখন কোথায় ছিলেন ঐ সব্যসাচীর উত্তরীয় পরিধানকারী কলাম লেখক সৈয়দ? কোথায় ছিলেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ? কোথায় ছিলেন
নামাযী-হেজাবী-তাসবীহওয়ালী জননেত্রী?
কোথায় ছিলেন বঙ্গবন্ধুর পাজরের হাড্ডি দিয়ে
ডুগডুগি বাজাবার আকাঙ্খা পোষণকারীণী সেকালের অগ্নিকন্না ও আজকের মন্ত্রী? সেদিন তাঁরা ওদেরকে বাহবা দেওয়ার জন্যে কেউ ছুটে গিয়েছিলেন শাহবাগ চত্বরে
যুবক যুবতীর দিবারাত্রি চব্বিশ ঘণ্টার মিলন-মেলায়!
সেদিন প্রতিবাদে জ্বলে উঠেছিলেন ঐ নব্বই বছরের বৃদ্ধ
আল্লামা আহমদ শফীই। সেদিন আপনারা ঐ কুলাঙ্গারদের নিন্দা করতে গরজ বোধ করেননি! বরং
ইনিয়ে বিনিয়ে বলার চেষ্টা করেছিলেন এটা
নেহাৎই জামাতীদের কারসাজি। ওরাই চাতুরী করে ব্লগারদের নামে ব্লাসফেমী কাণ্ড করেছে।
তারপর যখন আসল সত্য বেরিয়ে এলো যে, এক বছর আগেই মহামান্য আদালত একটি মামলার প্রেক্ষিতে এ
ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে ওদেরকে গ্রেফতার করার আদেশ জারী করেছিলেন তখন তাঁরা চুপসে
গিয়েছিলেন। লোক দেখানো গ্রেফতার গ্রেফতার নাটক করেছিলেন। সে নাটকের ফল ভাল হয়নি।
দেশবাসী তাওহীদী জনতা বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে। স্মরণকালের বিশাল প্রতিবাদ মিছিল
লংমার্চ করে তারা এসে দুই দুইবার শাপলাচত্বরে সমবেত হয়ে বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিয়েছে
নেতানেত্রীরা যতই বলুক, বাঙ্গালী জাতি ইসলামের কথা ভুলে গিয়ে ‘শক-হুনদল পাঠান-মোঘল এক দেহে লীন’ হয়ে ধর্ম বিবর্জিত
নতুন এক বাংলাদেশ জেগে উঠেছে, তারা মিথ্যাবাদী।
বাংলার মানুষ আজো শাহজালাল-শাহমখদুমের-শাহবদর-কুৎবুল আলম, তীতুমীর-হাজী শরীয়তউল্লাহর পতাকা বহন করে চলেছে। তারা আজো মুসলিম, কালও মুসলিম এবং মরণ পর্যন্ত মুসলিম পরিচয়েই বেঁচে থাকবে। ‘মহা ভারতের মহামানবের সাগরতীরে’
তারা লীন হতে রাজি নয়। আল্লামা আহমদ শফী
যেহেতু সে কাফেলার সিপাহসালার তাই
সম্মিলিত বাতিল শক্তি তাঁর পেছনে লেগেছে। তেঁতুল রহস্যের ধুঁয়া তুলে তাঁকে হেনস্তা
করার অপচেষ্টা করছে। কিন্তু কুত্তা যতই ঘেউ ঘেউ করুক না কেন, হাতীর অগ্রযাত্রা তাতে একটুও ব্যাহত হবে না ইনশাআল্লাহ।
অবস্থার দৃষ্টে বলতে হচ্ছে
তেঁতুল তত্ব কঠোর সত্য মানে না ভণ্ড হায়,
বেচারা সত্য সাথী হারা আজ পথে পথে কাতরায়!
এ জন্যে বহুদিন পূর্বেই মহাজন মহাজ্ঞানী এক মনীষী আক্ষেপের
সূরে বলেছিলেন, ‘সত্য বাবু মরিয়া গিয়াছে’। সত্য বাবু মরে গেলেও আজ থেকে প্রায় আশি বছর পূর্বেই আল্লামা আহমদ শফির
চাটগাঁয়েরই এক কৃতী সন্তান মহবুবুল আলম ‘মোমেনের জবান বন্দী’ নামে যে অমর গ্রন্থটি লিখে গেছেন, তার পাতায় পাতায় সে বিবরণ ছড়িয়ে রয়েছে। বাংলা একাডেমী থেকে সে পাকিস্তান আমলেই ‘মুঝে এতেরাফ হ্যায়’ (I do confess) শিরোনামে এর উর্দু ভাষ্য প্রকাশিত হয়েছিল। মাওলানা আব্দুর
রহমান বেখূদ বইটির উর্দূ অনুবাদ করেছিলেন। লেখক মোমিন বলেই সত্য কথাগুলো লিখে যেতে
পেরেছেন। ভণ্ডরা তা পারে না। এই মাত্র ক’দিন আগে প্রয়াত (তাদের
রুচির দিকে লক্ষ্য করেই মরহুম শব্দটা লিখলাম না) ‘নন্দিত নরকে’র, নুহাশ পল্লীতে শায়িত লেখকের জীবনের শেষ অংকটাতেও সে
শিক্ষা নিহিত রয়েছে যিনি পরমা সুন্দরী শরীফ সুশিক্ষিতা আজীবন-সঙ্গিনী ও তাঁর
উপযুক্ত পুত্রকন্যার মায়া বিসর্জন দিয়ে কন্যার বান্ধবী এক পিচ্চি মেয়েকে নিয়ে ‘নন্দিত নরকে’ প্রবেশ করাকেই শ্রেয় জ্ঞান করেছিলেন। সে মেয়েটি এখন
কুলহারা বিধবা! এর পেছনেও সেই কঠোর বাস্তব ‘তেঁতুল তত্ত্ব’। যে সব্যসাচী সৈয়দ এ
প্রশ্নে খুব লেখালেখিতে ব্যস্ত লজ্জার মাথা খেয়ে ‘লজ্জা’র নির্বাসিতা লেখিকা তসলিমা নাসরিন তাঁর সম্পর্কেও তার পুস্তকে মন্তব্য
করেছে পিতৃসম এ ‘সৈয়দ’ তার দেহবল্লরীর এক নাজুক স্থানে হাত দিয়ে তাকে অবাক
করেছিলেন! না, আর পারা গেল না। সাধু সাবধান! বেশী বাড়াবাড়ি করলে আরো
অনেক নেতা-নেত্রীর থলের বিড়াল বেরিয়ে পড়বে।